জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম প্রয়াণ দিবস আজ

সকালবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম: আমি চিরতরে দূরে চলে যাবো, তবু আমারে দেবো না ভুলিতে’- গানে এ কথা বলে গিয়েছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম।

আজ শনিবার জাতীয় কবির ৪৬তম প্রয়াণ দিবস। প্রেম ও দ্রোহের কবি হয়ে তিনি তার গানের চরণের মতোই বাংলা ভাষাভাষীর হৃদয়ে বেঁচে আছেন; থাকবেন।

প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীসহ সারা দেশে নানা আয়োজনে কবিকে স্মরণ করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে সমাধি প্রাঙ্গণে শুরু হয় আলোচনা সভা। সকাল সোয়া ৯টার দিকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও সকালে বিএনপিসহ বিভিন্ন সংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এসময় বিশিষ্টজনেরা বলেন, নজরুল চর্চা শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক নয়, সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।

তারা বলেন, নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চেতনা যুগে যুগে অনুপ্রেরণা যোগাবে বিশ্বের মানুষকে। নজরুলই প্রথম এই উপমহাদেশে বিদ্রোহী চেতনাকে জাগ্রত করেছিলেন।

কবি নজরুল ইনস্টিটিউট এ উপলক্ষে বিকাল সাড়ে ৫টায় ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

কবির জন্ম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জৈষ্ঠ (১৮৯৯ সালের ২৪ মে) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে।

আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম প্রয়াণ দিবস। প্রেম ও দ্রোহের কবি হয়ে তিনি তার গানের চরণের মতোই বাংলা ভাষাভাষীর হৃদয়ে বেঁচে আছেন; থাকবেন।

১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র (১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট) ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।

বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা।

তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সংগীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।

কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ছিল ঘটনাবহুল। বাংলা ১৩০৬ সনের ১১ জ্যৈষ্ঠ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। তার ডাকনাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন। পিতা ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম।

অভাব-অনটন ছিল শৈশব থেকেই তার নিত্যসঙ্গী। শৈশব থেকেই লেটো দলের বাদক, রুটির দোকানের শ্রমিক এভাবেই পেরিয়ে গেছে তার শৈশব-কৈশোর। পরে কাজ করেছেন সৈনিক হিসেবে। সাংবাদিকতা করেছেন। কাজ করছেন এইচএমভি ও কলকাতা বেতারে।

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে পথে নেমেছেন। পাশাপাশি সাহিত্যসাধনা তো ছিলই। শাসকের কোপানলে পড়েছেন, কারারুদ্ধ হয়েছেন কিন্তু নত হয়নি নজরুলের উচ্চ শির।

১৯৭২ সালের ২৪ মে কবি কে সপরিবারে ঢাকায় আনা হয়। দেওয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা।

১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে নাগরিকত্ব দেয়। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকে ভূষিত করা হয় তাকে।

তিনি ছিলেন চির প্রেমের কবি। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত তিনি বিদ্রোহী, কিন্তু তার প্রেমিক রূপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই বলতে পারেন ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’

One thought on “জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম প্রয়াণ দিবস আজ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!