আবরার ফাহাদ হত্যায় বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীর মৃত্যুদণ্ড

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীর মৃত্যুদণ্ড ও বাকি পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।

বুধবার বেলা ১২টার দিকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আলোচিত এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে, সকালে কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রিয় কারাগার থেকে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ২২ আসামিকে আদালতে নেয়া হয়। রায়কে কেন্দ্র করে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আদালত পাড়ায় অতিরিক্ত ২ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে গেল ২৮ নভেম্বর আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা পিছিয়ে ৮ই ডিসেম্বর ধার্য করা হয়। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের আদালত এ দিন ধার্য করেন। এ সময় বিচারক বলেন, আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক আরও ভালোভাবে বিশ্লষণ করে রায় প্রদানে আরো কিছু সময় প্রয়োজন।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে ২০১৯ সালের ৬ই অক্টোবর রাতে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ঘটনার নির্মমতা সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লে দেশব্যাপী ওঠে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড়।

জোড়ালো হয় ন্যায় বিচারের দাবি। ঘটনার পরদিন চকবাজার থানায় মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। পুলিশ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আটজন। ১৩ই নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ডিবি পুলিশ। পলাতক তিন আসামিসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে শুরু হয় বিচার।

আলোচিত এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৬০ সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। এছাড়া ২১টি আলামতসহ আটটি জব্দ তালিকা আদালতে জমা দেয়া হয়। গত ১৪ই নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ২৮শে নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করে আদালত।

নৃশংস এ হত্যা মামলায় এজহারভুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ২২ আসামি কারাগারে ছিল, আর মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ও মোস্তবা রাফিদ পলাতক।

অভিযোগপত্রে যে ২৫ জনকে আসামি করা হয়, তারা হলেন—বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার ওরফে অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, আইন বিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, ছাত্রলীগকর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মো. মুজাহিদুর রহমান, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, এস এম মাহমুদ সেতু, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!