বাগেরহাটে ১৫ বছরের পুরুষের নবজাতক দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়

সাংবাদিক:মোঃ সবুজ হোসেনঃ

প্রতিনিয়ত কত রকমের ঘটনা ঘটে চলেছে আমাদের চারিপাশে। তার সব আমরা জানতে না পারলেও কিছু কিছু ঘটনা আমাদের কাছে চলে আসে মিডিয়ার মাধ্যমে। তেমনি একটি ঘটনা এটি।

বাগেরহাটের শরশখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রিক্সা চালক নাজমুল ওরফে নাজমা আক্তার (১৫) একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেছে। সোমবার দিনগত রাত ১টার দিকে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়।

এঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুরুষের পেটে সন্তান হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার সকাল থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে শত শত মানুষ।

এই ঘটনার জন্য দায়ী মৃত শামছু তালুকদারের ছেলে ও উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী লম্পট রফিকুল ইসলাম তালুকদারকে (৪০) আটক করেছে পুলিশ।

এলাকাবাসী জানায়, শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা গ্রামের মৃত আ. খালেকের মেয়ে নাজমা আক্তার ওরফে নাজমুল। চার বছর বয়সে তার পিতা মারা যান। এর পর থেকে মায়ের কাছেই বড় হতে থাকে সে। বছর পাঁচেক আগে মা মরিয়ম বেগম অন্যত্র বিয়ে করে তাকে ছেড়ে চলে যান। পিতা- মাতা হারা নাজমার ঠাই হয় বৃদ্ধ দাদীর কাছে। অভাবের কারণে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতে থাকে তার।

গত বছর খানেক ধরে জীবিকার তাগিদে তিনি বেছে নেন রিকশা-ভ্যান চালানোর কাজ। এ কারণে নিজেকে মানুষরূপী পশুদের হাত থেকে বাঁচতে সে পুরুষের ছদ্মবেশ ধারণ করে। মেয়েদের পোশাক বাদ দিয়ে পরা শুরু করে শার্ট-প্যান্ট।

মাথার চুল ছাঁটে ছেলেদের মতো। দেখতে অবিকল ছেলে। নিজের নাম পরির্তন রাখে নাজমুল ইসলাম। কিন্তু এরপরও সে নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি। জীবন সংগ্রামে হেরে গিয়ে লম্পটের লালসার শিকার হয়ে সে এখন কুমারী মাতা।

শরণখোলা উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী রফিকুলের লালসার শিকার হন নাজমা। গত ৯ মাস আগে রায়েন্দা বাজারের ব্যাবসায়ী মা হার্ডওয়ার এর মালিক রফিকুল ইসলাম তালুকদার (৩৯) নাজমা আক্তারকে বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয়ভিতি দেখিয়ে তার দোকানের পিছনে নিয়ে কয়েক বার ধর্ষন করে। পরে মেয়েটি অন্তসত্বা হয়ে পড়ে। একথা বহুবার বলা হলেও রফিকুল তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান।

সোমবার সন্ধ্যায় প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন নাজমা। রাত ১টার দিকে ফুঁটফুঁটে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার জানান, নাজমা ও তার মেয়ে সুস্থ আছে। পুরুষ ছেলের সন্তান হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় সকাল থেকে শত শত মানুষ হাসপাতালে ভিড় করছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম মঙ্গলবার সন্ধায় এ প্রতিবেদককে জানান, নাজমার স্বীকারোক্তি মতে ওই রাতেই থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। মামলার আসামী রফিকুলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার দুপুরে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!