শাজাহানপুরে কিশোর শাকিব হত্যার প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবীতে লাশ নিয়ে মানববন্ধন

মিজু আহম্মেদ, শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খরনা ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের এক নারী সদস্যের সরকারি প্রকল্পের বালু নিয়ে অপর এক পুরুষ সদস্যের সাথে বিরোধের জের ধরে মারপিটের ঘটনায় মোঃ শাকিব (১৮) নামের এক কিশোর হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শাকিবের মরদেহ নিয়ে মানববন্ধন করেছে নাদুরপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক-কর্মচারি ও শিক্ষার্থীরা।

বুধবার বিকেলে উপজেলার নাদুরপুকুর এলাকায় বগুড়া-নাটোর সড়কে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

নিহত শাকিব উপজেলার খরনা ইউনিয়নের বড় তিতখুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে এবং চলতি বছর খরনা নাদুরপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সে রাজমিস্ত্রির কাজ করতো।

নাদুরপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও খরনা ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি সাজেদুর রহমান সাহিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। অন্যথায় এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন-কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান, ইউপি সদস্য মাসুদ রানা, আওয়ামী লীগ নেতা মেহেদী হাসান বাবু, বুলবুল আহম্মেদ, শাহীন আলম, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আকতার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, উপজেলার খরনা ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসন নারী সদস্য সেলিনা আকতার মুন্নি বীরগ্রাম দক্ষিনপাড়া গ্রামের রাস্তায় সিসি ঢালাই কাজের জন্য সরকারি বরাদ্দ পান। ওই কাজ নিয়ে নারী সদস্যের সাথে ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমানের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সম্প্রতি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলেও বেশ কিছু বালু অবশিষ্ট থেকে যায়। ওই বালুগুলো রাস্তার পাশে পড়েছিল। দ্বন্দ্বের জের ধরে গত ২৪ অক্টোবর রাতে ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমানের ইঙ্গিতে তার সহযোগীরা অবশিষ্ট বালুগুলো নিয়ে যায়। বালু নিয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে নারী সদস্যের ছেলে মিনহাজ (২৮) ও তার বন্ধু শাকিব আলী (১৭)’র সাথে পুরুষ সদস্য জিয়াউর রহমান ও তার সহযোগীদের বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে গত রোববার রাতে বীরগ্রাম এলাকায় শাকিবকে একা পেয়ে ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমানের সহযোগিরা শাকিব কে মারপিটে গুরুতর আহত করে। আহত শাকিবকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শাকিবের মা আছমা খাতুন বাদি হয়ে ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমানসহ এজাহার নামীয় ৭ ব্যক্তি ও অজ্ঞাতনামা ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।

শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ্ আল মামুন জানিয়েছেন, নারী ও পুরুষ সদস্যের মধ্যে প্রকল্পের কাজ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জের ধরে বালু নিয়ে যাওয়া ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু আহত শাকিব মারা যাওয়ায় মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে বলেও তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!