নুরু ও কোটা আন্দোলন, ছাত্র সমাজের ভবিষ্যৎ কোন দিকে? 

নিউজ ডেস্কঃ কোটা আন্দোলন তৈরি হয়েছে বহু আগে। আওয়ামীলীগ সরকার যখন মুক্তিযোদ্ধা ও দলীয় কোটা নিয়ে অতিরিক্ত মাত্রায় তোড়জোড় শুরু করে তখন নুরুল হক নুরুর নেতৃত্বে পুনরায় কোটা আন্দোলন সক্রিয় হতে শুরু করে। এরপর কোটা আন্দোলন থেকে হঠাৎ করেই বঙ্গবন্ধুর ছবি হাতে নিয়ে জয়বাংলা শ্লোগানকে সামনে রেখে তারা সরকার পতন আন্দোলনের দিকে চলে গেলো। সে আন্দোলনে বহু সাধারণ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলেও আন্দোলন অতোটা ফলপ্রসূত না হওয়ায় সরকারের বাহিনী তাদেরকে দমিয়ে দিতে সক্ষম হয়। একটা সময় সরকারের পক্ষ থেকে দাবি ওঠে নুরু সহ কোটা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত সকলেই নাকি আমেরিকার টাকা খেয়ে সরকার পতন আন্দোলনের দিকে ঝুঁকেছে। পরবর্তীতে যার সত্যতা প্রকাশ পায় নুরুর সাথে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সেলফি তোলার মধ্য দিয়ে। কোটা আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে কতজন এখন কোটা ফ্রিতে সরকারি চাকুরী করছে তা আমি জানিনা। কারো জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন।

 

কোটা আন্দোলন শেষ হওয়ার পর নুরু “বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ” নামে একটা সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেই ব্যানারে নুরুরা ডাকসু নির্বাচনে একটি প্যানেল দেয়। নির্বাচনে নুরুর প্যানেলের বামপন্থী থেকে শুধুমাত্র একটা মেয়ে নির্বাচিত হয়। গোটা প্যানেলের পরাজয়ে হতাশ হয়ে নুরু আবার সরকার বিরোধী আন্দোলনের ডাক দেয়। জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী ইমেজ সংকটে ভোগা সরকার নুরুর সাথে সংঘাতে যায়নি। তাকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডেকে নিয়ে লোভ দেখিয়ে ভিপি পদ দেয়ার আশ্বাস দিলে সে প্রধানমন্ত্রীকে মা ডেকে মিডিয়ার সামনে পদচুম্বন করে। সে নিজেকে ছাত্রলীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলে সেদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দাবি করে। প্রধানমন্ত্রীকে একবার মা একবার বোন ডেকে হাঁসির রোল ফেলে দেয় নুরু। এ নিয়ে সেদিন সারাদেশ ছিঃ ছিঃ ছিঃ করেছে। নুরুর প্যানেলের একমাত্র নির্বাচিত সেই বামপন্থী মেয়েকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ইনভাইট করা হলেও সে যায়নি।

 

ভিপি পদ দেয়ার পর নুরু ঠান্ডা হয়ে যায়। ভাবেনি তার সতীর্থদের কথা ভাবেনি তাদের কষ্ট, আঘাত, দমন-পীড়ন ও রাজপথ রঞ্জিত হবার কথা! সতীর্থদের গুম ও নিহত হওয়া নিয়ে নুরুকে কোন কর্মসূচি দিতে দেখিনি। রাশেদ ছাড়া বাম, শিবিরের সব সতীর্থ নুরুর সঙ্গ ত্যাগ করে। “বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ” নামে কয়েকটি জেলায় ইফতার পার্টি করতে গেলে নুরুকে মার ধরের উপর রাখে ছাত্রলীগ। মার খেয়ে নুরু বিচার দিতো ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সেক্রেটারির নিকট।

 

গরীব ঘরের নিরীহ সাধারণ ছাত্রদের বিভিন্ন স্বপ্ন দেখিয়ে তার পাশে রাখতে চায় নুরু। তবে আবরার হত্যার পর সরকার বিরোধী একটা আন্দোলন জমাতে চেয়েছিলো নুরু। তা আর হয়ে উঠেনি এজন্য যে তার সাথে ছোট ছোট ছেলে ছাড়া অন্যকেউ জড়ো হচ্ছিলো না। যাদের সংখ্যা পঞ্চাশ কি ষাটের কাছাকাছি হবে। এরপর নুরুকে মার্কিন দূতাবাসের নির্দেশে ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন সভায় কয়েকবার বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে নুরু বলেন, তিনি সু্যোগ বুঝে আওয়ামীলীগ বা বিএনপিতে যোগ দিবেন। নুরুকে নাকি এখন আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কোন মিটিংয়ে ডাকা হয়না? এর কারণ জানতে চাইলে ডাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন যুগান্তরকে বলেন, তিনি (নূর) নিজের রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত আছেন। ক্যাম্পাসে খুব বেশি সময় দেন না। এজন্য তাকে পাওয়া যায়নি। শুনেছি, তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ নেয়ার জন্য লবিং-তদবির করছেন। যেহেতু ছাত্রদল বিবাহিতদের সংগঠন, তাই নূরের সেখানে পদ নিতে আরও সুবিধা হবে।

 

আমি জানতে চাই নুরু যদি সুযোগ বুঝে আওয়ামীলীগ বিএনপিতে ঝাঁপ দেয় তাহলে তার সাথে যেসব ছাত্ররা যুক্ত আছে তারা কোনদিকে যাবে? ছাত্রদলের হাইকমান্ডের কয়েকজন নেতাকে জিজ্ঞাসা করেছি আপনারা কখনো ক্ষমতায় এলে নুরুকে কি সুযোগ দিবেন? তারা বলেছে প্রশ্নই আসেনা। ছাত্রলীগ নাকি নুরুকে কখনো তাদের সাথে নিবেনা তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে তাকে। শুভ্রদেব চৌধুরী নামে একজন বাম ঘরানার নেতা বলেন, নুরু পঁচে তার গন্ধ বেরিয়ে গেছে। তাকে নিয়ে কথা বলতে চাইনা। ডাকসুর মেয়াদ শেষ হলে নুরুর অধ্যায় শেষ হবে বলে মনে করেন তিনি। তাই নুরু ছাত্রলীগ ছাত্রদলে পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছে আর নয়তো ইমরান এইচ সরকারের মত বিদেশে পালিয়ে যাবে।

 

সংগৃহীতঃ সারাবেলা ডটকম থেকে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!