বেহাল কবি নজরুল কলেজের একমাত্র ছাত্রাবাস

সুমনা আখি, ক্যাম্পাস প্রতিনিধিঃ রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী কবি নজরুল সরকারি কলেজের একমাত্র আবাসিক হল শহীদ শামসুল আলম ছাত্রাবাস। প্রায় ১ যুগ ধরে বেহাল জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে ছাত্রদের এই আবাসিক হল। শতাধিক বছরের পুরোনো এই আবাসিক হল পুরান ঢাকার যেমন ঐতিহ্য তেমনি ছাত্রদের মাথা গোঁজার একমাত্র অবলম্বন। দীর্ঘদিন ধরে মেরামত না করায় পেলস্তরা খসে খসে পড়ছে। দিনের বেলায় ও ছাত্রাবাসের ভিতরে অন্ধকারাচ্ছন্ন ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে থাকে। প্রায় দুইশত শিক্ষার্থীর থাকার একমাত্র আবাসিক হল কবি নজরুল কলেজের এই ছাত্রাবাস।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এখানে বিশুদ্ধ বা সুপেয় পানির কোন ব্যবস্থা নেই। যার কারণে ছাত্ররা প্রতিনিয়ত কলেরা, আমাশয় সহ নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার নেই। যেগুলো আছে তা ব্যবহারযোগ্য নয়। এখনো ছাত্রদের কূপ থেকে পানি নিয়ে গোসল করতে হয়। মাঝেমধ্যে কূপেও পানি থাকে না। ছাত্রাবাসে খাবারের জন্য ডাইনিং ব্যবস্থা থাকলেও নির্দিষ্ট পর্যবেক্ষকের অভাবে তা প্রায় তিন বছর বন্ধ আছে। ফলে ছাত্রদের বাইরে খাবার খেতে হয়। সব মিলিয়ে ছাত্রদের দুর্ভোগের অন্ত নেই।

ফয়সাল আহমেদ রুমি নামের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, বিগত ৬ বছর ধরে এই ছাত্রাবাস অবস্থান করেছি। শুরু থেকেই আমাদের এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আদৌ এর কোন উন্নতি হয়নি। আসলে এটি কেবল নামমাত্র কবি নজরুল কলেজের অবাসিক হল। এর কোন খোঁজ খবরই কলেজ কর্তৃপক্ষ নেয় না। কয়েক মাস আগে এখানকার এক প্রভাবশালীর নাম করে এই হল দখল করার চেষ্টা করেছিল। অলরেডি একপাশ দখল করে স্থানীয়রা ‘খেলাঘর’ তৈরি করেছে। তবুও কলেজ প্রশাসনের টনক নড়েনি।

ছাত্রাবাসে অবস্থানরত কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক বায়েজীদ শিকদার রাহাদ বলেন, গত চার বছর ধরে ছাত্রাবাসের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান চেয়ে একাধিকবার অধ্যক্ষ এবং প্রক্টরের নিকট আবেদন জানালেও কলেজ কর্তৃপক্ষ এর কোন সমাধান করেননি। ফলে ক্রমান্বয়ে দুর্ভোগ বাড়ছে ছাত্রাবাসে থাকা ছাত্রদের। এখানে ছাত্রদের জীবনধারণ অত্যন্ত কষ্টদায়ক ও অসম্ভভ হয়ে পড়ছে। কলেজ প্রশাসনের নিকট আমাদের একটাই দাবি ছাত্রাবাসের যেসকল সমস্যা আছে তা অতি শীঘ্রই নিরসন করতে হবে।

এ বিষয়ে কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগম বলেন, ছাত্রাবাস থেকে আমাদের বার্ষিকী কোন আয় নেই। কতোজন শিক্ষার্থী ওখানে অবস্থান করছে তার নির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। কিছু দিন আগে ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান চেয়ে একটি দরখাস্ত দিয়েছে। ইতিমধ্যে ছাত্রাবাস সংস্কারের জন্য একটা বাজেট হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে আমরা শিক্ষার্থীদের থাকার সুবিধার্থে যা যা করা প্রয়োজন তা করবো। এছাড়া এর ঐতিহ্য ঠিক রেখে এটি মেরামতের ব্যবস্থাও করবো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!