পহেলা বৈশাখে ‘সীমিত পরিসরে’ হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা

সকালবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকমঃ

আর একদিন পরই পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চলতি বছর পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হবে কিনা সেটি নিয়েই সন্দেহ ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছিল এবারের পহেলা বৈশাখ ভার্চুয়ালি উদযাপিত হবে। তবে সব আশঙ্কা কাটিয়ে নববর্ষকে স্বাগত জানাতে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। এবারের শোভাযাত্রা চারুকলা অনুষদের ভেতরেই ‘সীমিত পরিসরে’ অনুষ্ঠিত হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাত্র ১০০ জন এই আয়োজনে অংশ নিতে পারবেন।

রোববার (১১ এপ্রিল) রাতে এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘এ বছর করোনার কারণে সব আয়োজনেই জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে যেহেতু এটি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর, সেহেতু যদি আমরা কিছুই না করি, তবে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। তাই সীমিত পরিসরে হলেও মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করবে কর্তৃপক্ষ। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ চত্বরেই সীমাবদ্ধ থাকবে, বাইরে বের হবে না এবং প্রবেশ সংরক্ষিত থাকবে। এক্ষেত্রে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আমাদের চারুকলা অনুষদের চত্বর অনেক বড়, আশা করি, আমরা নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনেই সব সম্পন্ন করতে পারব।’
মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, ফেস শিল্ড করোনাকে মাথায় রেখে মূলত এবারের থিম ‘কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর’। এ ছাড়া রাজা-রানি, বর্ম এসব বিষয়গুলোকে এবার তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে থাকবে ১০০টি ডিজাইন।

এ বিষয়ে নিসার হোসেন বলেন, ‘আমরা একটা খারাপ সময় অতিক্রম করছি। তবে এ খারাপ সময়কে পার করে ভালো কিছু হবে, নতুন বছর আমাদের ভালো কিছুর বার্তা দেবে, এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের।’
চারুকলা অনুষদ ঘুরে দেখা গেছে, মঙ্গল শোভাযাত্রা কার্যক্রমের প্রস্তুতি পুরোদমে এগিয়ে চলছে। তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন মুখোশ ও ডিজাইন। আঁকা হচ্ছে বিভিন্ন আল্পনা। আর চারুকলার বাইরের প্রাচীরও রাঙানো হয়েছে ভিন্ন রঙের আল্পনায়।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সালে যশোরে চারুপীঠ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো নববর্ষ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করে। সেই শোভাযাত্রায় ছিল বিভিন্ন পাপেট, বাঘের প্রতিকৃতি, পুরনো বাদ্যযন্ত্রসহ আরো অনেক শিল্পকর্ম স্থান পায়। শুরুর বছরেই যশোরে শোভাযাত্রা আলোড়ন তৈরি করে। পরবর্তীতে ১৯৮৯ সাল থেকে যশোরের সেই শোভাযাত্রার আদলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!