ঢাকা ১০:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টি নেতার জবরদখল ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ নিরীহ পরিবার

সকালবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জাতীয় পার্টি নেতা ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে নিরীহ পরিবারের জমি অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার নোয়াগাঁও  ইউনিয়ের গোবিন্দপুর গ্রামের জাতীয় পার্টির নেতা মকবুল ও তার দোসররা পতিত স্বৈরাচার সরকারের আমল থেকেই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোরপূর্বক মৃত হাসমত আলীর চার ছেলের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ২৩ শতাংশ জমি দখল করে নেয় বলে জানা গেছে। যাহা চরগোবিন্দপুর মৌজার এসএস -৪৩৪ ও ৪৩৫ এবং আর এস ৬৯৭।  ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা বাঁধা দিতে গেলে মকবুল ও তার দোসররা দিনদুপুরে তাদের উপর একাধিকবার বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে নারী পুরুষসহ অনেককেই পিটিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী পরিবার গত বছরের ১৬-১২-২০২৪ ইং তারিখে সোনারগাঁ থানায় লিখিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের কথা জানান। পরবর্তীতে এ সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মকবুলকে জানালে তাদেরকেও অসম্মান ও লাঞ্ছিত করে এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের প্রাননাশের হুমকি দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, মকবুল জাতীয় পার্টির নেতা ও আওয়ামী লীগের দোসর। সে বেপরোয়া, দীর্ঘদিন ধরেই তার অন্যায়, চাঁদাবাজি ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ। মো: শফিউল্লাহ জানান, আমার জানামতে,  মকবুল উপজেলার যুব উন্নয়ন অফিসে চাকরি করে, সে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পার্টি ও উপজেলা প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় এসব অপকর্ম করে আসছে। হামলার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মো: জাকারিয়া এ বিষয়ে জানান, দীর্ঘদিন ধরে মকবুল ও তার দোসররা  রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নানারকম অপকর্ম করে আসছে, তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না কারণ সে একজন ত্রাস সৃষ্টিকারী।

জানা যায়, মকবুল শুধু ভূমিদস্যুই নয়, নিজেকে জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতা পরিচয় দিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। একই এলাকার বাসিন্দা মো: কবির হোসেন অভিযোগ করেন, বিশেষ করে বিগত সরকারের আমলে প্রতিটি নির্বাচনের সময় সে তার দোসরদের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিরোধী দলের লোকজনদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে এবং কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বাড়ি ছাড়া করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নের যুব সমাজের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে সে নিজের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
এলাকাবাসীর দাবি, মকবুল ও তার সহযোগীরা প্রায়ই বিভিন্ন দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। কেউ না দিলে তাদের হুমকি দেওয়া হয়, কখনও কখনও শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়। একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মকবুলের দোসররা এলাকায় ভীতি সৃষ্টি করেছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বর্তমান সরকারের  প্রশাসনের কাছে মকবুল ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। তারা বলেন, আমরা চাই, এই অত্যাচার ও চাঁদাবাজির অবসান হোক, এলাকায় শান্তি ফিরে আসুক।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানায় ওসি শূন্য থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত রাশেদুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।  

Tag :

সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টি নেতার জবরদখল ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ নিরীহ পরিবার

সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টি নেতার জবরদখল ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ নিরীহ পরিবার

Update Time : ১১:০৭:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

সকালবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জাতীয় পার্টি নেতা ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে নিরীহ পরিবারের জমি অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার নোয়াগাঁও  ইউনিয়ের গোবিন্দপুর গ্রামের জাতীয় পার্টির নেতা মকবুল ও তার দোসররা পতিত স্বৈরাচার সরকারের আমল থেকেই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোরপূর্বক মৃত হাসমত আলীর চার ছেলের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ২৩ শতাংশ জমি দখল করে নেয় বলে জানা গেছে। যাহা চরগোবিন্দপুর মৌজার এসএস -৪৩৪ ও ৪৩৫ এবং আর এস ৬৯৭।  ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা বাঁধা দিতে গেলে মকবুল ও তার দোসররা দিনদুপুরে তাদের উপর একাধিকবার বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে নারী পুরুষসহ অনেককেই পিটিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী পরিবার গত বছরের ১৬-১২-২০২৪ ইং তারিখে সোনারগাঁ থানায় লিখিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের কথা জানান। পরবর্তীতে এ সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মকবুলকে জানালে তাদেরকেও অসম্মান ও লাঞ্ছিত করে এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের প্রাননাশের হুমকি দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, মকবুল জাতীয় পার্টির নেতা ও আওয়ামী লীগের দোসর। সে বেপরোয়া, দীর্ঘদিন ধরেই তার অন্যায়, চাঁদাবাজি ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ। মো: শফিউল্লাহ জানান, আমার জানামতে,  মকবুল উপজেলার যুব উন্নয়ন অফিসে চাকরি করে, সে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পার্টি ও উপজেলা প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় এসব অপকর্ম করে আসছে। হামলার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মো: জাকারিয়া এ বিষয়ে জানান, দীর্ঘদিন ধরে মকবুল ও তার দোসররা  রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নানারকম অপকর্ম করে আসছে, তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না কারণ সে একজন ত্রাস সৃষ্টিকারী।

জানা যায়, মকবুল শুধু ভূমিদস্যুই নয়, নিজেকে জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতা পরিচয় দিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। একই এলাকার বাসিন্দা মো: কবির হোসেন অভিযোগ করেন, বিশেষ করে বিগত সরকারের আমলে প্রতিটি নির্বাচনের সময় সে তার দোসরদের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিরোধী দলের লোকজনদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে এবং কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বাড়ি ছাড়া করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নের যুব সমাজের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে সে নিজের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
এলাকাবাসীর দাবি, মকবুল ও তার সহযোগীরা প্রায়ই বিভিন্ন দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। কেউ না দিলে তাদের হুমকি দেওয়া হয়, কখনও কখনও শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়। একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মকবুলের দোসররা এলাকায় ভীতি সৃষ্টি করেছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বর্তমান সরকারের  প্রশাসনের কাছে মকবুল ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। তারা বলেন, আমরা চাই, এই অত্যাচার ও চাঁদাবাজির অবসান হোক, এলাকায় শান্তি ফিরে আসুক।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানায় ওসি শূন্য থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত রাশেদুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।