ময়মনসিংহে লকডাউন অমান্য করে ষাড়ের লড়াই প্রতিযোগীতা- ইউপি মেম্বার বরখাস্ত 

আশিকুজ্জামান মিজান, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ষাঁড়ের লড়াইয়ের আয়োজন করে বরখাস্ত হয়েছেন এক ইউপি মেম্বার। তিনি নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম।

 

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ষাঁড়ের লাড়াই আয়োজন করে গণজমায়েত করেন ওই ইউপি মেম্বার।

 

এই গণজমায়েত করে তিনি জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার তাকে পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।

 

তার আগে এই জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক।

 

ষাঁড়ের লড়াই আয়োজন করে ইউপি সদস্য রফিকুল অপরাধমূলক কার্যক্রম করায় তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।

 

করেনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদের সাতজন চেয়ারম্যান এবং তিনজন সদস্যকে বৃহস্পতিবার বরখাস্ত করেছে সরকার।

 

এনিয়ে ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের ১৫ জন চেয়ারম্যান এবং ১৯ জন সদস্য, একজন জেলা পরিষদ সদস্যসহ মোট ৩৫ জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

 

করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় লকডাউন উপেক্ষা করে ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে ষাঁড়ের লড়াইয়ের আয়োজন করা হয়।

 

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) সকালে গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে এ লড়াই হয়। করোনা ইস্যুতে লড়াই চলাকালীন সামাজিক দূরত্ব উপেক্ষা করে জনসমাগম করে গ্রামবাসী।

 

এ ঘটনায় ইউপি সদস্য রফিকুল ও মো. রনু মিয়াকে আটক করে একই দিন সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া লড়াইয়ে অংশ নেয়া ষাঁড়গুলোকে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়।

 

করোনা সংক্রমণের কারণে নেত্রকোনা জেলায় চলছে লকডাউন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে সবাইকে। এ সব নিয়ম উপেক্ষা করে মেম্বার আয়োজন করছেন ষাঁড়ের লড়াই।

 

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মোতালেব কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি লোকমুখে খবর পেয়েছি। তবে মেম্বার জড়িত থাকার বিষয়টি আপত্তিজনক।

 

দুর্গাপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, লকডাউন উপেক্ষা করে যারা এই লড়াইয়ের আয়োজন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইউপি সদস্য রফিকুল ও মো. রনু মিয়াকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া লড়াইয়ে অংশ নেয়া ষাঁড়গুলোকে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করার শর্তে দু’জনকে মুক্তি দেয়া হয়।

 

এর আগে লকডাউনের মধ্যে দলবল নিয়ে বিয়ে করায় এর আগে একজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শককেও বরখাস্ত করা হয়েছিল।

 

করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় সর্বপ্রথম জেলা হিসেবে নারায়ণগঞ্জকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে অবরুদ্ধ ঘোষণা করে সরকার।

 

এরপর দলবল নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নে গিয়ে গত ৭ এপ্রিল বিয়ে করে চাকরি থেকে বরখাস্ত হন সোনারগাঁও উপজেলার আমিনপুর ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক শাহিন কবির।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!